রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১০ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় সরকার এবং টেকসই উন্নয়ন

বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ একটি দেশ। কার্যকর ও নিয়মতান্ত্রিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশকিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়াস ছাড়াও আইনি প্রচেষ্টা বাংলাদেশের দুর্যোগকবলিত মানুষের দুর্যোগ প্রশমনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, এজেন্সি, স্থানীয় সরকার সংস্থা এবং জনগণের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় বজায় রাখতে এবং দুর্যোগ আক্রান্ত জনগণের ভোগান্তি হ্রাস করার লক্ষ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে পারে। এই লেখাটি একটি গবেষণা পত্রের সারাংশ যা আমি লন্ডন ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ (SOAS)-এর ভিজিটিং স্কলার হিসেবে লিখেছিলাম।

সংক্ষেপে বলি কিভাবে দুর্যোগ উন্নয়নকে প্রভাবিত করে? দুর্যোগ উন্নয়নের উপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলে। পরিবারগুলি বাড়িঘর, জীবিকা এবং প্রিয়জন হারায়, মানুষ ব্যবসা, চাকরি এবং পরিষেবা হারায়, শিশুরা এবং বিশেষ করে মেয়েরা স্কুল মিস করে এবং বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে থাকে ৷ দুর্যোগ দারিদ্র্য হ্রাসের অগ্রগতি বাতিল করতে পারে। এগুলি ছাড়াও, ঘন ঘন দুর্যোগের কারণে, মানুষের নির্ভরতা বৃদ্ধি পায় যার ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশ সরকার বিগত কয়েক বছরে জাতীয় থেকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) পর্যায় পর্যন্ত কার্যকর ও পদ্ধতিগত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তার জন্য বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, লাইন এজেন্সি, স্থানীয় সরকার সংস্থা এবং জনগণের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় বজায় রাখার জন্য এবং জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য তাদের যথাযথ কার্যকারিতা নিশ্চিত করার জন্য, বাংলাদেশ সরকার গত দশক থেকে কঠোর পরিশ্রম করে আসছে। তৃণমূল স্তর এই প্রক্রিয়াগুলিকে কার্যকর করার জন্য, স্ট্যান্ডিং অর্ডার অন ডিজাস্টার (এসওডি) একটি গাইড বই হিসাবে কাজ করে। এসওডি অনুসারে, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিষদ থেকে শুরু করে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে।

এসওডি অনুসারে ৩৬ জন সদস্য সমন্বয়ে ইউডিএমসি গঠিত, যেখানে কমিটির চেয়ারম্যান সর্বোচ্চ আরও তিনজন সদস্য সংযোজিত করতে পারেন এবং স্থানীয় বাস্তবতা ও বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় দল এবং উপ-দল গঠন করতে পারেন।ইউডিএমসিকে গ্রামীণ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আকর হিসেবে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং তার দুর্যোগ প্রস্তুতি, প্রশমন, জরুরি প্রতিক্রিয়া এবং দুর্যোগ-পরবর্তী পুনর্বাসনে ভূমিকা রাখার কথা রয়েছে।

ইউডিএমসিকে নিশ্চিত করতে হয় যে, স্থানীয় জনগোষ্ঠী সংশ্লিষ্ট দুর্যোগ সম্পর্কে অবহিত এবং তারা পারিবারিক ও সম্প্রদায় পর্যায়ে দুর্যোগ সংক্রান্ত ঝুঁকি হ্রাস করার ক্ষেত্রে ব্যবহারিক ব্যবস্থা গ্রহণে সক্ষম। একইসঙ্গে এ কমিটি স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে পরিবার ও সম্প্রদায় পর্যায়ে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস সম্পর্কিত সাফল্যের গল্পগুলো ছড়িয়ে দেয় এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে দুর্যোগের আশঙ্কা, দুর্বলতা ও ঝুঁকি বিশ্লেষণ এবং ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস কর্মপরিকল্পনা এবং আকস্মিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে।

ইউডিএমসি ত্রৈমাসিক সমন্বয় সভার মাধ্যমে উন্নয়ন সংস্থা এবং পরিষেবা সরবরাহকারীদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে এবং ঝুঁকি হ্রাসের জন্য কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি ঝুঁকি হ্রাস কর্মপরিকল্পনার অগ্রগতি পর্যালোচনা করে এবং ঝুঁকি হ্রাস কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে তহবিল সংগ্রহের কাজ করবে। দুর্ভাগ্যক্রমে, ইউডিএমসির সভায় আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণ, বিশেষ করে সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অত্যন্ত সীমিত প্রবেশাধিকার রয়েছে। এর দ্বারা বোঝায় স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির ভূমিকা, নির্দেশনা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে স্থানীয় প্রান্তিক জনগণের কাছে তথ্যের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

আসলে দুর্যোগ-পূর্ববর্তী সময়ে ইউডিএমসির কার্যকর ভূমিকা খুবই সীমিত।। স্থানীয় পর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে স্পষ্ট হয় যে, ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে অগ্রাধিকার পায়নি। যেসব ব্যক্তি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি পরিচালনা করেন এবং নেতৃত্ব দেন, তারা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত বিশেষ জ্ঞান রাখেন না, যদিও এসওডি তাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সামগ্রিক সমন্বয় ও পরিচালনা করার ক্ষমতা দিয়েছে।

স্থানীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতারা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকায় এ ক্ষেত্রে মানুষের আগ্রহ এবং জবাবদিহিতার বোধ প্রতিফলিত হয় না। এর ফলে দুর্যোগের ঝুঁকিমুখী জনগণ বঞ্চিত হয়, কেননা তারা কোনোভাবেই জানতে পারে না, স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কী কী এবং কোন ধরনের কর্মসূচি রয়েছে। অন্যদিকে, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও কমিটি পরিচালনার পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নন। এছাড়া দুর্যোগ ঝুঁকির নাজুকতা এবং বিদ্যমান সম্পত্তি বা সংস্থান পরিমাপ, পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রশমন প্রচেষ্টা কার্যকর করার প্রক্রিয়ায় স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ খুবই সীমিত।

সত্যি বলতে, ইউডিএমসির কর্মকাণ্ডে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ স্থানীয় পর্যায়ে দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং প্রশমনে তাদের আত্মবিশ্বাস এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করে। ইউডিএমসির মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে এবং সর্বোপরি তাদের নিজস্ব দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রশমন প্রচেষ্টায় সক্ষম করে তোলে। ইউডিএমসিগুলোতে নারীর অংশগ্রহণ নিছক অলংকরণ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে বেশকিছু কার্যক্রম চালু রয়েছে বলা হয়ে থাকে, তবে এ সম্পর্কিত তথ্যেও পর্যাপ্ততা বা কমিটিগুলো কোথায়, কীভাবে কাজ করছে এবং কোথায় করছে না তা জানার সুযোগ স্থানীয় জনগণের যৎসামান্যই আছে।

দুর্যোগ প্রস্তুতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইউডিএমসির কার্যকারিতার জন্য দুর্যোগের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী উভয় সময়েরই নিয়মিত ভিত্তিতে ইউডিএমসির সভা পরিচালনার আবশ্যকতা রয়েছে। দুর্যোগের আগে, সময় এবং পরবর্তী পর্যায়ে নিয়মিতভাবে ইউডিএমসির সভা আয়োজন করা; দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জন্য নিবেদিত তহবিল সংগ্রহ; প্রতিটি ইউপি অফিসে দুর্যোগ সতর্কীকরণ কেন্দ্র স্থাপন করা; ইউপি কমপ্লেক্সের মধ্যে দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ; জরুরি প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রতিটি ইউপির অধীনে একটি স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা; দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং জরুরি প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষণ শুরু করা; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সামাজিক সচেতনতামূলক প্রচারণা তৈরি করা; এবং দ্রুত এবং সময়মত সমন্বয় নিশ্চিত করা । এর পাশাপাশি, ঝুকি মূল্যায়ন, পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং প্রস্তুতি এবং প্রশমন সমাধানের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় নাগরিকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে ।

অধিকন্তু, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ভবিষ্যতের জন্য উন্নয়ন টেকসই হতে হলে এটি অপরিহার্য। শুধুমাত্র যদি একটি দেশের শাসন কাঠামো একটি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য সহায়ক জননীতির বাস্তবায়ন ও প্রয়োগকে সক্ষম করে তাহলেই টেকসই জীবিকা অর্জন করা সম্ভব এবং দুর্যোগের সংবেদনশীলতা হ্রাস করা সম্ভব। কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এসডিজি অর্জনে স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্বীকার করা আমাদের স্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের একত্রিত করতে এবং একটি সাধারণ বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নতুন অংশীদারিত্ব তৈরি করতে সক্ষম করবে যা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

গ্রামীণ বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রকৃত অর্থে স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়ন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ, কর্তৃত্ব, জনশক্তি এবং প্রশিক্ষণসহ একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার সময়ের দাবি। তৃণমূল পর্যায়ে টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সবার দায়িত্ব’ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মডেল অনুযায়ী ধনী-গরিব, শিক্ষিত, নিরক্ষর, ধর্ম ও রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে জনগণকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পুরো প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত থাকতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার তিনটি ধাপে (দুর্যোগের আগে, দুর্যোগের সময় এবং দুর্যোগ পরবর্তী) অবদান রাখার জন্য তাদের অবশ্যই প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত এবং তবেই আমরা ইউনিয়ন পরিষদের একটি কার্যকর এবং ফলপ্রসূ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি আশা করতে পারি।

 

লেখক: ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভিজিটিং স্কলার (অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ)।

 

ইমেইল: t.islam@juniv.edu

 

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় রাতে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি

নওগাঁর পত্নীতলায় সড়কে গাছ ফেলে একটি বিআরটিসি বাস ও মাইক্রোবাসে ডাকাতি। ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁর পত্নীতলায় সড়কে গাছ ফেলে একটি বিআরটিসি বাস ও মাইক্রোবাসে ডাকাতির ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর-সাপাহার সড়কের মানাষী ও করমজাইয়ের মাঝামাঝি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

ডাকাতের কবলে পড়া বিআরটিসি বাসের সুপার ভাইজার রতন কুমার সাহা জানান, রাজশাহী থেকে তাদের বাসটি পোরশার নিতপুরের উদ্দেশ্যে রাত পৌনে ৯টার দিকে ছেড়ে আসে। রাত পৌনে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সড়কে গাছ ফেলা দেখে বাসের গতি কমিয়ে ফেলা হয়। এতে বাসটির পাশাপাশি একটি মাইক্রোবাসও আটকা পড়ে। এরপর একদল মুখোশধারী দরজা-জানালার গ্লাস ভেঙে বাসে ঢুকে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, নারী যাত্রীদের স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মালামালসহ প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়।

রতন কুমার সাহা আরও জানান, বাসের পেছনে থাকা মাইক্রোবাসটিতেও ডাকাতরা হানা দেয়। তারা মাইক্রোবাসটির চালককে মারধর করে মালামাল লুটপাট করে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে পত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ এনায়েতুর রহমান বলেন,‘আসলে সড়কে গাছ ফেলে বাসে ডাকাতির চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। ডাকাতের কবলে পড়া বাসটিতে ২০-২৫ জন যাত্রী ছিল। এছাড়া ওই সময় সেখানে একটি মাইক্রোবাস ডাকাতের কবলে পড়ে। ডাকাতরা মাইক্রোবাস্টির কাচ ভাঙ্চুর করে। তবে যাত্রী ও চালকদের ক্ষতি করতে পারেনি। পুলিশের একটি দল ওই এলাকায় টহলে ছিল। যাত্রীদের ফোন পাওয়ার আগেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে যাওয়ার কারণে ডাকাতরা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করতে পারেনি। ছয়-সাতজন যাত্রীর মোবাইল ফোন ও কিছু নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে ডাকাতরা।

তিনি আরও বলেন, যাত্রীদের কী পরিমাণ মালামাল লুট হয়েছে তা তদন্ত করার পর জানা যাবে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই তারা পালিয়েছে। পুরো ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকাত চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

Header Ad
Header Ad

প্রযোজনায় নাম লেখালেন বুবলি  

ছবিঃ ঢাকাপ্রকাশ

সুপারস্টার শাকিব খানের বিপরীতে ২০১৬ সালে ‘বসগিরি’ সিনেমা দিয়ে ঢালিউডে নাম লেখান শবনম বুবলী। একজন সংবাদ পাঠিকা থেকে হয়ে যান চিত্রনায়িকা।

সিনে ক্যারিয়ারের ৯ বছরের মাথায় নতুন পরিচয়ে হাজির হচ্ছেন তিনি। বুবলী নাম লেখালেন প্রযোজনায়। নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

জানা গেছে, বুবলীর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম বিগ প্রোডাকশন। এর ব্যানারে তৈরি হবে সিনেমা, নাটক, স্বল্পদৈর্ঘ্য, মিউজিক ভিডিও। কার্যক্রম শুরু হবে নাটক দিয়ে। যেটি নির্মিত হবে আগামী কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে। আর সিনেমার ঘোষণা আসবে আগামী বছর।

এ বিষয়ে বুবলী বলেন, প্রায় এক দশকের ক্যারিয়ারে অনেক প্রোডাকশন হাউসের সিনেমায় অভিনয় করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বিগ প্রোডাকশনের ভাবনা। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনেক মেধাবী ও অভিজ্ঞ মানুষ যুক্ত হচ্ছেন। আমি সব সময় মানসম্পন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার চেষ্টা করেছি। প্রযোজক হিসেবেও চাইব ভালো কাজ উপহার দিতে।

প্রতিষ্ঠিত অভিনয়শিল্পীদের পাশাপাশি নতুন শিল্পীদের নিয়েও বিশেষ ভাবনা আছে বুবলীর। তিনি বলেন, আমি চাই সবাইকে নিয়ে কাজ করতে। এখানে প্রতিষ্ঠিত কলাকুশলীদের পাশাপাশি নতুনরাও থাকবেন। অনেকে হয়তো ভালো কাজ করেন, কিন্তু নতুন হওয়ার কারণে বড় কোনো কাজে সুযোগ পাচ্ছেন না। সেই শিল্পীদের নিয়ে কাজ করতে চাই আমরা।

বিগ প্রোডাকশনের পরিকল্পনা জানিয়ে বুবলী বলেন, আমি সিনেমার মানুষ, তাই সিনেমা নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। এর জন্য আরও অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। তাই চলতি বছর নাটক, শর্টফিল্ম, মিউজিক ভিডিও বানিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চাই। যাত্রাটা শুরু হবে কোরবানি ঈদের নাটক নিয়ে। এর পাশাপাশি অন্যান্য কাজ আসতে থাকবে। বিগ প্রোডাকশন থেকে সিনেমা নির্মাণ হবে আগামী বছর। সে সময় বড় আয়োজন করে ঘোষণা দেওয়া হবে।

এদিকে, অভিনয়েও ব্যস্ত সময় পার করছেন বুবলী। আসছে রোজার ঈদে একাধিক সিনেমায় তাকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যেই ‘পিনিক’ ও ‘জংলি’ সিনেমা দুটির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

প্রধান উপদেষ্টা সাথে দেখা করতে

চোখে লাল কাপড় বেধে ঢাকার উদ্দেশ্যে কুয়েটের ৮০ শিক্ষার্থী  

ছবিঃ সংগৃহীত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদ, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শরিফুল ইসলামের অপসারণ ও নতুন নিয়োগসহ ছয় দফা দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে এই সাক্ষাত হওয়ার কথা রয়েছে।

সকাল ৮টায় কুয়েট ক্যাম্পাস থেকে দুটি বাসে করে ৮০ শিক্ষার্থী ঢাকার পথে রওনা দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের মাথায় লাল কাপড় বাঁধা ছিল।

ঢাকার পথে রওনার আগে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীন। এজন্য আমরা দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করব। এরপর নিরাপদ জায়গায় চলে যাব। সেখান থেকেই অনলাইনে আমাদের কার্যক্রম চলবে। যতদিন দাবি পূরণ না হচ্ছে, ততদিন ক্যাম্পাসে ফিরব না।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এই মুহূর্তে ক্যাম্পাস ছেড়ে দিচ্ছি। আমরা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সাহস করে যেতে পারছি না । তাই নিজেদের অর্থায়নে ক্যাম্পাসে বাস ডেকে এনেছি।

'আমরা কুয়েট অথরিটির কাছে বাস সহায়তা চেয়েছিলাম। তারা আমাদের কোনো সহায়তা করেননি। সরকার যেহেতু আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তাই আমরা চোখে লাল কাপড় বেঁধে ক্যাম্পাস টোটালি শাটডাউন করে চলে যাচ্ছি। আমাদের দাবি পূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত কুয়েট ক্যাম্পাসে কোন রকমের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ চলবে না, বলেন তারা।

তারা আরও বলেন, 'ঘটনার পাঁচ দিন পরেও সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের সহায়তার আশ্বাস আসেনি। আমাদের নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর চাপাতি, রামদা দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে, যা জুলাই বিপ্লবের পর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন হামলা করতে কেউ সাহস করেনি । অথচ এই হামলায় আমাদের শিক্ষার্থীদের মাথা ফেটে গেছে ,হাত তিন টুকরো হয়ে গেছে।

যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই বিপ্লবের ওপর দাঁড়িয়েছে সেই সরকার আমাদের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরার পরও যোগাযোগ করেনি । সেই সরকারকে আমাদের রক্তের দায় নিতে হবে। ইমেইলের মাধ্যমে স্মারকলিপি পাঠানোর তিন দিন পার হয়েছে, কিন্তু সরকারের থেকে কোনো সাড়া পাইনি। এই ক্যাম্পাস আমাদের জন্য সেফ না। যেখানে হামলার পর সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা নিরাপত্তা দেওয়ার কথা সেখানে কুয়েটের নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া কেউ নেই। আমাদের নিরাপত্তা এখন আমরাই দিয়ে যাচ্ছি।

শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ক্যাম্পাসের বাইরে যেসব শিক্ষার্থী থাকে, তাদের বাড়িওয়ালা বাড়ি ছেড়ে দিতে বলেছেন। তারা অনেক জায়গা থেকে হুমকি পাচ্ছেন। আমরা সবাই আতঙ্কিত, আমাদের পরিবার আতঙ্কিত। আমরা ক্যাম্পাসের ভিতরে বাইরে সেইফ না । আমরা অভিভাবকহীন। আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কেউ নেই।

তারা বলেন, ভিসিসহ কিছু শিক্ষক বলার চেষ্টা করছেন আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বক্তব্য। হামলাকারীরা স্পষ্ট এবং চিহ্নিত কিন্তু তাদের বাদ দিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। রক্তাক্ত কুয়েট প্রদর্শনীতে অস্ত্রধারীদের নাম পরিচয়, ছবি বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কুয়েটে ছাত্রদল সমর্থক ও বিএনপির লোকদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের মনে হচ্ছে কুয়েট প্রশাসনেরই সমস্যা রয়েছে।

এর আগে, প্রধান উপদেষ্টার কাছে ই-মেইলে চিঠি পাঠান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়। তা স্বত্বেও ছাত্রদল ক্যাম্পাসে রাজনীতি শুরু করতে চাইলে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের ফর্ম বিতরণের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেয়। এসময় কুয়েট ছাত্রদলের কর্মীরা হঠাৎ মিছিলে এসে ধাক্কা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়। এতে কুয়েট ছাত্রদল এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। ওই হামলায় কুয়েটের শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয় এবং চার ঘণ্টা যাবত এই হামলা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আমাদের কোনো ধরনের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। এই মর্মে আমরা ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগসহ ৬ দফা দাবি উত্থাপন করি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় রাতে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি
প্রযোজনায় নাম লেখালেন বুবলি  
চোখে লাল কাপড় বেধে ঢাকার উদ্দেশ্যে কুয়েটের ৮০ শিক্ষার্থী  
বিয়ে বাড়িতে গান বাজানোর জেরে বাসর ঘরে হামলা  
আজ দুবাইয়ে ভারত-পাকিস্তান মহারণ  
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা গ্রেপ্তার  
দুপুরের মধ্যে ১৪ জেলায় বজ্রবৃষ্টির আভাস  
সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যা জানালো র‍্যাব  
এ বছরই মধ্যে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন : দুদু  
জিম্মিদের ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল  
জশ ইংলিসের সেঞ্চুরিতে রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ডকে হারাল অস্ট্রেলিয়া
১৫ বছর দলীয় বিবেচনায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে: উপদেষ্টা ফারুক
দিনাজপুরের বিরামপুরে ৮ জুয়াড়ি গ্রেফতার
চীনে নতুন করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব, আবারও মহামারির শঙ্কা
নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রায়হান, সম্পাদক বেলায়েত
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল আনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রত্যেক শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে: মঈন খান
জামায়াত দাবি করে ২১ শে ফেব্রুয়ারির সমস্ত কৃতিত্ব তাদের: রনি
যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে আ.লীগ নেতাকে পুলিশে সোপর্দ
দীঘি নয়, ‘টগর’ সিনেমায় নায়িকা হচ্ছেন পূজা চেরী